সেই ছেলেটা হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে
- সেই ছেলেটার পরিচয় দাও।
- সে নিরুদ্দেশ হয়ে গেল কেন?
- নিরুদ্দেশ হওয়ার পরিণতি কী হয়েছিল?
- সেকি নিরুদ্দেশ হয়ে থাকতে চেয়েছিল?
১) সেই ছেলেটার পরিচয় দাও :
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা 'নীল মানুষের কাহিনি' নামক গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। সেই ছেলেটি বলতে এই গল্পের প্রধান চরিত্র রণজয়ের কথা বলা হয়েছে।
রণজয় চিত্রার হবু স্বামী। ঘটনাচক্রে রণজয় নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। কারণ, ভিন গ্রহের প্রাণীর সংস্পর্শে আসায় তার শারীরিক অবস্থার অভূতপূর্ব পরিবর্তন হয়ে যায়। বর্তমানে তার উচ্চতা প্রায় সাড়ে সাত ফিট। মুখখানাও প্রকান্ড বড়ো। গায়ের রঙ একদম নীল। অবস্থা এমন হয়েছে যে, চিত্রাও তাকে আর চিনতে পারছে না। এমনকি জন্মদাতা পিতাও তাকে দেখে অজ্ঞান হয়ে গেছে।
২) সে নিরুদ্দেশ হয়ে গেল কেন?
রণজয় নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। বলা ভালো নিরুদ্দেশ হতে বাধ্য হয়েছে। কারণ, ঘটনাচক্রে ভিন গ্রহের প্রাণীর সংস্পর্শে আসায় তার শারীরিক অবস্থার এমন পরিবর্তন হয়, যে নিজের প্রেমিক এমনকি তার জন্মদাতা পিতা পর্যন্ত চিনতে পারছে না। শুধু তাই নয়, তাকে দেখলেই প্রিয়জনরাও অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। দৈত্য বা কোন জন্তু ভেবে লাঠি সোটা নিয়ে তেড়ে আসে। এই অবস্থায় সে নিরুদ্দেশ থাকতে বাধ্য হয়।
৩) নিরুদ্দেশ হওয়ার পরিণতি কী হয়েছিল?
এইভাবে নিরুদ্দেশ হওয়ার ফলে রণজয়ের জীবনে ভয়ংকর বিপর্যয় নেমে আসে। ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে যায়। নিজের বাড়িতে ফিরে আসাও সম্ভব হয়নি। দিনরাত তাকে বনে জঙ্গলে কাটাতে হচ্ছে। খাবারের অভাবে প্রায় দিনই অনাহারে থাকতে হয় তাকে। জন্মদাতা পিতা পর্যন্ত তাকে আর চিনতে পারছে না। মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকা তার পক্ষে ভয়ংকর কঠিন হয়ে পড়েছিল।
৪) সেকি নিরুদ্দেশ হয়ে থাকতে চেয়েছিল?
কিন্তু এভাবে নিরুদ্দেশ থাকতে চায়নি। সে বারবার চেয়েছে নিজের পরিবারে ফিরে আসতে। চিত্রার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টার মধ্যে তার এই ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। পেটের খিদে মেটাতে অন্যের বাড়িতে ঢুকে খিচুড়ি খেয়ে দুজন চোরকে বেঁধে রেখে যায় সে। সঙ্গে একটি চিঠি লিখে রেখে যায় বাড়ি ওয়ালাকে। বোঝাতে চায় যে সে আসলে একজন ভালো মানুষ। এবং সে এই সমাজে মানুষ হিসাবেই বাঁচতে চায়। মানুষ যেন তাকে মানুষ হিসাবে গ্রহণ করে।
----------xx--------
Comments
Post a Comment