“এদিকে পাপুর একা একা যাওয়া নিষেধ”
- উদ্ধৃত অংশটি কার লেখা কোন গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে?
- পাপু কে?
- পাপুর কোন দিকে যাওয়া নিষেধ ছিল এবং কেন?
- পাপু সেদিকে গিয়েছিল কেন?
- সেদিকে যাওয়ার পর কি ঘটেছিল সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর :
১) কোন লেখকের কোন গল্প?
২) পাপু কে?
পাপু এই গল্পের একটি কিশোর চরিত্র, যে তাদের দোতলার বারান্দায় বসে একা একাই বল নিয়ে খেলা করছিল।
৩) যাওয়া নিষেধ ছিল কেন?
পাপু যে বাড়ির দোতলার বারান্দায় বল নিয়ে খেলছিল, ঠিক তার পিছন দিকে ছিল বড় বড় ঘাস দিয়ে ঢাকা একটি মাঠ। মাঠের ওপাশে বড় বড় গাছে ভরা একটা বিশাল বাগান। সেখানে আম, জাম, লিচু গাছ ছাড়াও অনেকগুলো বাঁশ গাছ ছিল। শোনা যায়, সেই বাঁশ বনে নাকি রাত্রিবেলায় শাকচুন্নিরা আসে। মাঝরাত্রে তারা নাকি নাকি-সুরে শেয়ালের মত গান গায়। মাঠের ওপাশে থাকা এই বন নিয়ে নানা ধরণের ভয় ধরানো গল্প প্রচলিত ছিল। আর এই ভয় ধারানো গা ছমছমে পরিবেশের কারণেই ছোট্ট পাপুর এই মাঠে নামা কিংবা বাগানের ধারে যাওয়া নিষেধ ছিল।
৪) তবু পাপু গেল কেন?
নিষেধ থাকা সত্ত্বেও পাপু একবার মাঠে নেমেছিল। কারণ, দোতলার বারান্দায় বল খেলতে খেলতে হঠাৎই তার বলটি পিছনের রেলিং ঘেরা মাঠে পড়ে যায়। আশপাশে নিষেধ করার কেউ ছিল না দেখে আপু বল খুঁজতে মাঠের দিকে গিয়েছিল।
৫) যাওয়ার পর যা ঘটেছিল :
মাঠে নেমে পাপু বলটাকে খুঁজতে থাকে। কিন্তু কোন ভাবেই সে বলটা খুঁজে পাচ্ছিল না। নাছোড়বান্দা পাপু বলটা খুঁজতে খুঁজতে এক সময় বাগানের খুব কাছে চলে আসে। হঠাৎ সে দেখতে পায় বাগানের মধ্যে একটা বড় জামরুল গাছের পাশে একটা লোক লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।লোকটা দৈত্যের মতো লম্বা, মাথায় বড় বড় চুল, গায়ের রং একদম নীল। কোনো মানুষের গায়ের রং ওরকম হয় বলে পাপ কোনদিন শোনেনি। তার মনে হচ্ছিল, জানালা দরজার রং করার মতো কেউ যেন মানুষটার সারা গায়ে নীল রং মাখিয়ে দিয়েছে। প্রথমদিকে তাকে দেখে চোর বলে মনে হলেও পরে তার ভুল ভাঙে এবং পাপু দারুণভাবে ভয় পেয়ে যায়। লোকটি তার নাম ধরে ডাকলে সে আরও ঘাবড়ে যায় এবং ছুটে পালিয়ে আসে। পাপুর কাছ থেকে তার দিদি চিত্রা এসব শোনে এবং তাকে ‘দারুণ গুলবাজ’ বলে উপহাস করে।
একসময় চিত্রাও সেখানে উপস্থিত হয় এবং এই অদ্ভুত সেই মানুষটিকে দেখে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এই অবস্থায় লোকটি চিত্রাকে তুলে বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়। পাপু আরও ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করে। পাপুর চিৎকার শুনে মা, ছোট কাকা সহ অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে লোকটি চিত্রাকে ফেলে বাগানের ওপাশের গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়। চারিদিকে রটে যায় নিশানপুর গ্রামে একটা দৈত্য এসেছিল। কেউ বলল, এটা গরিলা আবার কেউ তাকে শিম্পাঞ্জি বা ওরাং-ওটাং বলে রটিয়ে দিল। সব মিলিয়ে সেদিন নিশানপুর গ্রামে দারুন একটা উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়েছিল।
---------xx---------
Comments
Post a Comment