“পাপু প্রথমে ভেবেছিল ---”
- পাপু কার সম্পর্কে কী ভেবেছিল?
- তার এমন ভাবার কারণ কী?
- তার ভাবনাটা কী সঠিক ছিল?
- শেষমেষ সে কী ভেবেছিল?
- তার এই ভাবনার পরিণতি কী হয়েছিল?
উত্তর :
১) পাপু কার সম্পর্কে কী ভেবেছিল?
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ‘নীল মানুষের কাহিনি’ গল্পের প্রধান চরিত্র রণজয়। সে অন্য গ্রহের মানুষের সংস্পর্শে এসে দৈত্যের মতো চেহারা পেয়েছে। পাপু এই রণজয় সম্পর্কে ভেবেছিল।
পাপু রণজয়কে প্রথমে ভেবেছিল সে আসলে একজন চোর।
২) তার এমন ভাবার কারণ কী?
তার এমন ভাবনার পিছনে দুটো বিষয় কারণ হিসেবে কাজ করেছিল।
- রণজয় বাগানের একটা বড় জামরুল গাছের পাশে লুকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
- চোরের মতই একদৃষ্টিতে পাপুদের বড়ির দিকে তাকিয়ে ছিল।
৩) তার ভাবনাটা কী সঠিক ছিল?
আপাত দৃষ্টিতে পাপুর এই ভাবনা যুক্তিযুক্ত মনে হলেও তা সঠিক ছিল না। কারণ, গল্পের পরবর্তী অংশে তার এভাবে লুকিয়ে থাকা এবং পাপুদের বাড়ির দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকার কারণ জানা যায়।
আসলে পাপুর দিদি চিত্রার সঙ্গে রণজয়ের বিবাহের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ভাগ্যের বিড়ম্বনায় ভিনগ্রহের মানুষদের সংস্পর্শে আসার কারণে তার দৈহিক চেহারা ও ক্ষমতার আমল পরিবর্তন হয়ে যায়। ফলে তাকে চেনার কোন উপায় ছিল না। অপরিণত বোধ বুদ্ধিতে তাই আপুর কাছে রণজয় প্রথমে চোর হিসেবে চিহ্নিত হয়।
৪) শেষমেষ সে কী ভেবেছিল?
এরপর তার ভাবনায় পরিবর্তন আসে। রণজয়ের দৈত্যের মতন লম্বা চেহারা, মাথায় বড় বড় চুল, গায়ের রং নীল হওয়ার কারণে শেষমেষ পাপু তাকে একটা দৈত্য কিংবা বক রাক্ষস হিসেবে চিহ্নিত করে।
৫) তার এই ভাবনার পরিণতি কী হয়েছিল?
পাপুর এই ভাবনা রণজয়কে এক গভীর বিপদের মধ্যে ফেলে দেয়। প্রথমে সে দৌড়ে পালিয়ে আসে এবং দিদি চিত্রার কাছে রণজয়কে দৈত্য হিসেবে পরিচয় দেয়। চিত্রা পাপুকে গুলবাজ আখ্যা দিয়ে নিজে স্বচক্ষে বিষয়টি বোঝার জন্য বাগানের ধারে আসে। কিন্তু জামরুল গাছের আড়াল থেকে রণজয় বেরিয়ে এলে চিত্রা ভয় পেয়ে যায় এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এই ঘটনার পর পাপু চেঁচামেচি শুরু করে এবং চিত্রার মা ও ছোট কাকা সহ গ্রামের মানুষ ছুটে আসে। লাঠি, দা, শাবল নিয়ে দশ বারো জন লোক রনজয় দিকে তেরে যায়। লাঠি দিয়ে বাড়ি মারতেই প্রাণো যায় লাঠিটি কেড়ে নেয় এবং দেশলাই কাঠির মত পট করে ভেঙে ফেলে। এবং দৌড়ে জঙ্গলের মধ্যে চলে যায়। এরপর আর সে প্রকাশ্যে আসার সাহস দেখাতে পারেনি। কারণ মানুষ, এমনকি তার বাবা পর্যন্ত তাকে রনজয় বলে চিনতে পারেনি।
Comments
Post a Comment